‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিছু বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শে এরশাদ-জিয়ার মতো নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন। বুধবার (২৪ আগস্ট) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ‘ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতন দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায়  তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘২০০৭ সালে আওয়ামীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছিল কিন্তু তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার অশুভ উপায়ে ক্ষমতা লাভের আশায় আন্দোলন প্রতিহত করতে চেয়েছিলো। এটির ফলেই মূলত সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতায় আসে। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিছু বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শে এরশাদ-জিয়ার মতো নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা।’

সাংসদ সদস্য আরো বলেন, ‘আগস্ট মাস ইতিহাসের কালো অধ্যায়। যে মাসে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে, যে মাসে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে। সেই মাসেই আমাদের শিক্ষকদেরকেও কারাবন্দী করা হয়েছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী সকল সরকার অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় এসেছে। আর নানাভাবে দেশকে জঙ্গিদের দিকে নিয়ে গেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল-মামুন ও উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মো. সাদেকুল ইসলাম।

এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামাণিক, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া ও প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সেনাসদস্যের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় কয়েক ছাত্রের। এক পর্যায়ে সৈন্যরা ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়। এসময় তারা এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন । ওই ঘটনার রেশ ধরে ছাত্রদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সেনাসদস্যদের হামলার ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করেছিলেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে ৫ জন শিক্ষক এবং ৫ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছিল। এছাড়া ৮ জন শিক্ষক, ২ জন কর্মকর্তা ও ১১ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে প্রায় ৫ শতাধিক অজ্ঞাতপরিচয় শিক্ষার্থীদের নামে ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এছাড়া ২২ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-পুলিশ সংঘাতের সময় গুলিতে রিকশাচালক আনোয়ার নিহত হন।

কলমকথা/এসএইচ